এদিন MAMATA BANERJEE বুঝিয়ে দিয়েছেন, অনুব্রতর জায়গা তাঁরই থাকবে। এবারও কেষ্টর পদ্ধতিতেই করাতে হবে নির্বাচন। পাশাপাশি দলনেত্রী সাফ নির্দেশ, কেষ্ট ঘনিষ্ঠ কাউকে দল বা ভোটের দায়িত্ব থেকে বাদ দেওয়া যাবে না।
অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্ট বন্দি তিহাড়ে, কিন্তু তাঁর কৌশলেই করতে হবে লোকসভা নির্বাচন। জেলাভিত্তিক বৈঠকে এমনই নির্দেশ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee)। সাফ জানিয়ে দিলেন, শুধু কেষ্টর পদ্ধতি অবলম্বন করলেই হবে না, বাদ দেওয়া যাবে না তাঁর কোনও লোককে।এ দিন কালীঘাটে লোকসভা নির্বাচনের জন্য বীরভূম জেলার প্রস্তুতি বৈঠকে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন, অনুব্রতর জায়গা অনুব্রতরই থাকবে৷ অনুব্রতকে দীর্ঘদিন আটকে রাখা যাবে না বলেও দাবি করেছেন মমতা৷
সামনেই লোকসভা নির্বাচন। ইতিমধ্যেই রণকৌশল ঠিক করতে শুরু করেছে রাজনৈতিক দলগুলি। জেলাভিত্তিক বৈঠক করছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তর ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদের পর এদিন কালীঘাটে বীরভূমের নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরেই বীরভূমের দায়িত্বে ছিল অনুব্রত মণ্ডল। কিন্তু বর্তমানে তিনি তিহাড় জেলে বন্দি। ফলে বীরভূম নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী সিদ্ধান্ত নেন, সেদিকেই নজর ছিল সকলের। এদিনের বৈঠকে স্পষ্ট যে, কেষ্টতেই আস্থা মমতার। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিয়েছেন, অনুব্রতর জায়গা তাঁরই থাকবে। এবারও কেষ্টর পদ্ধতিতেই করাতে হবে নির্বাচন। পাশাপাশি দলনেত্রী সাফ নির্দেশ, কেষ্ট ঘনিষ্ঠ কাউকে দল বা ভোটের দায়িত্ব থেকে বাদ দেওয়া যাবে না।
অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারির পরেই বীরভূম জেলার সাংগঠনিক কাজ দেখাশোনার জন্য একটি ৯ সদস্যের কোর কমিটি তৈরি করে দিয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী৷ এ দিন সেই কমিটি ভেঙে দিয়ে পাঁচ জনের একটি নতুন কোর কমিটি গড়ে দিয়েছেন মমতা৷ রাজ্য স্তর থেকে ফিরহাদ হাকিমই আপাতত বীরভূমের দায়িত্বে থাকছেন৷ তবে মমতা যে এখনও অনুব্রতর উপরেই আস্থা রেখেছেন, তা এ দিন বার বারই স্পষ্ট করে দিয়েছেন মমতা৷ এ দিনের বৈঠকেও বার বারই অনুব্রতর সাংগঠিনক দক্ষতার প্রশংসা করেন তৃণমূলনেত্রী৷ অনুব্রতকে রাজনৈতিক কারণেই আটকে রাখা হয়েছে বলে এ দিনের বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মমতা৷
নতুন যে পাঁচ সদস্যের কোর কমিটি গড়ে দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছেন সুদীপ্ত ঘোষ, আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিজিৎ সিনহা, বিকাশ রায়চৌধুরী এবং চন্দ্রনাথ সিনহা৷ বীরভূম জেলার দুটি লোকসভা আসনের মধ্যে এগারোটি বিধানসভা রয়েছে৷ বীরভূম জেলার বেশ কয়েকজন নেতাকে বিধানসভা ধরে ধরে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে৷ ঘটনাচক্রে, কোর কমিটিতেও যাঁদের রাখা হয়েছে, তাঁরা প্রত্যেকেই অনুব্রত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত৷
অভিজিৎ সিনহাকে লাভপুর এবং সাঁইথিয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে৷ চন্দ্রনাথ সিনহা দেখবেন বোলপুর, নলহাটি, মুরারই৷ চন্দ্রনাথ সিনহা এবং অভিজিৎ সিনহাকে যৌথভাবে ময়ূরেশ্বর বিধানসভার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে৷ আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের দায়িত্বে থাকবে রামপুরহাট এবং হাসন বিধানসভা কেন্দ্র৷ কাজল শেখের দায়িত্বে থাকবে নানুর এবং কেতুগ্রাম৷ সুদীপ্ত ঘোষ দেখবেন দুবরাজপুর, বিকাশ রায় চৌধুরীকে সিউড়ির পাশাপাশি দুবরাজপুরেরও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে৷
বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায়ও বৈঠক শেষে বলেন, কোর কমিটিতে যখন যখন যাঁকে দরকার হবে, ডেকে নেওয়া হবে৷ অনুব্রত মণ্ডল যে সাংগঠনিক দায়িত্ব দলের জন্য পালন করেছেন, আমরা কেউই তা অস্বীকার করতে পারিনা৷ দিদি বলেছেন, অনুব্রত মণ্ডলকে বেশি দিন আটকে রাখা যাবে না৷ উনি ছাড়া পাবেন না এমনও নয়৷ উনি ফিরে এলেই ওনার সব সাংগঠনিক দায়িত্ব ফিরে পাবেন৷
সূত্রের খবর, বৈঠকে আগাগোড়াই অনুব্রতর প্রশংসা শোনা গিয়েছে মমতার মুখে৷ জোট হবে না ধরে নিয়েই বীরভূমেও দুই আসনে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য তৃণমূলনেত্রী নির্দেশ দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর৷
পাশাপাশি, এ দিন বগটুইয়ের খোঁজও নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ বাখার জন্যও দলের নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি৷ পাশাপাশি, বিজেপি নেতারাই সবথেকে বড় চোর, সাধারণ মানুষকে তা বোঝানো যাচ্ছে না বলেও এ দিন বৈঠকে আফশোস করতে শোনা গিয়েছে তৃণমূলনেত্রীকে৷ তবে বিজেপি সভা করলেই পাল্টা সভা করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি৷ তবে অনুব্রত বিহীন বীরভূমের সংগঠন নিয়ে চিন্তার বিশেষ কিছু নেই বলেও এ দিন জানিয়ে দিয়েছন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷