তৃণমূল নেতা শিবু হাজরাও গ্রেফতার! সন্দেশখালিকাণ্ডে দুই অভিযুক্ত ধরা পড়ে গেলেও এখনও অধরা শাহজাহান

Sandeshkhali Incident: অবশেষে গ্রেফতার করা হল তৃণমূল নেতা শিবু প্রসাদ হাজরাকে ন্যাজাট থেকে । এদিন সন্দেশখালি মামলায় গণধর্ষণ ও খুনের চেষ্টার মামলা যুক্ত করে পুলিশ। মহিলার গোপন জবানবন্দির ভিত্তিতে গণধর্ষণের মামলা রুজু করা হয়েছিল। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই তার কিছুক্ষণের মধ্যে শিবু হাজরাকে গ্রেফতার করা হল। তবে, এই কাণ্ডে এখনও পর্যন্ত শেখ শাহজাহানের কোনও খোঁজ নেই।

Sandeshkhali Incident: সন্দেশখালি নিয়ে পুলিশের সাংবাদিক বৈঠকের অব্যবহিত পরে গ্রেফতার হলেন তৃণমূল নেতা শিবপ্রসাদ ওরফে শিবু হাজরা। শেখ শাহজাহান-ঘনিষ্ঠ ওই নেতা ‘পলাতক’ ছিলেন। শনিবার ন্যাজাট থানা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশের একটি সূত্রে খবর। বস্তুত, সন্দেশখালিকাণ্ডে সদ্য গণধর্ষণ ও খুনের চেষ্টার ধারা যোগ করেছে পুলিশ। তাতে অভিযুক্ত হিসাবে নাম রয়েছে বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা উত্তম সর্দার এবং তৃণমূল নেতা শিবপ্রসাদের। পাশাপাশি, খুনের চেষ্টার ধারাতেও মামলা রুজু হয়েছে।

Sandeshkhali Incident: সন্দেশখালি এলাকার গ্রামীণ মহিলাদের মুখে যে দুটি নাম উঠে এসেছিল, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হল এই শিব প্রসাদ হাজরা। সন্দেশখালি ২ এর জেলা পরিষদের সভাপতি শিবপ্রসাদ হাজরা ও তিনিই ছিলেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি। শেখ শাজাহানের বাম হাত বলা হতো তাকে। এলাকায় ভেড়ি দখল, জমির লিজের টাকা না দেওয়া, মহিলাদের সঙ্গে অভব্য আচরণ সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সন্দেশখালি এলাকায় নৈরাজ্যের অন্যতম কান্ডারী হলেন এই শিবু হাজরা বলেই দাবি জানিয়ে আসছিল গ্রামবাসীরা।

Sandeshkhali Incident

Sandeshkhali Incident: এদিন তার বিরুদ্ধে গণধর্ষণের মামলা যুক্ত করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছিল। এরপরেই তাকে গ্রেফতারের সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিল। সন্দেশখালি কাণ্ডের পর কেন শিবু প্রসাদ হাজরাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না? এই প্রশ্নে প্রতি নিয়ত রাজ্য সরকারকে বিদ্ধ করছিল রাজ্যের বিরোধী দলগুলো। এমনকি, পুলিশের ছত্র ছায়াতেই শিবু হাজরা রয়েছে বলেও অভিযোগ তুলেছিল গ্রামবাসীরা। এমত, অবস্থায় জোড়া চাপের মুখে পড়ে শিবুকে গ্রেফতার করা হল বলেই জানাচ্ছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

বসিরহাট পুলিশ জেলার সুপার হোসেন মেহেদি রহমান আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘ন্যাজাট থানা এলাকা থেকে শিবপ্রসাদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আগামিকাল (রবিবার) তাঁকে আদালতে হাজির করানো হবে।’’

Sandeshkhali Incident: বস্তুত, সন্দেশখালি-২ ব্লকের সভাপতি শিবুর নাম উঠে আসে শাহজাহানের সূত্র ধরে। গত ৫ জানুয়ারি শাহজাহানের বাড়িতে ইডির তল্লাশি করতে যাওয়া এবং আধিকারিকদের আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে আর দেখা মেলেনি তৃণমূল নেতার। তাঁর সঙ্গে সঙ্গে শিবুও ‘নিখোঁজ’ ছিলেন। এর মধ্যে শিবুর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলেছেন সন্দেশখালির স্থানীয় মহিলাদের একাংশ। গত ৭ ফেব্রুয়ারি ওই তৃণমূলের নেতাদের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগে গর্জে ওঠে সন্দেশখালি। ভাঙচুর চলে জেলা পরিষদের সদস্য তথা তৎকালীন অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি উত্তমের বাড়ি। পর দিন ভাঙচুর করা হয় শিবুর বাগানবাড়ি এবং মুরগির খামার। আগুনও ধরিয়ে দেওয়া হয় ওই খামারে।

Sandeshkhali Incident

Sandeshkhali Incident: স্থানীয় মহিলারা অভিযোগ করেন, রাতবিরেতে তৃণমূলের বৈঠকের নাম করে বিভিন্ন জায়গায় ডেকে নিয়ে যেতেন শিবু এবং উত্তম। কখনও-সখনও শিবুর বাগানবাড়িতেও যেতে হত মহিলাদের। ওই যৌন নিগ্রহের অভিযোগ নিয়ে ইতিমধ্যে শোরগোল রাজ্য তথা দেশে। তার মধ্যে শনিবার ‘অধরা’ শিবুর বিরুদ্ধে গণধর্ষণের মামলা রুজু হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। এক মহিলার গোপন জবানবন্দির ভিত্তিতে বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা উত্তম এবং শিবুর বিরুদ্ধে মামলায় গণধর্ষণের ধারা যোগ করা হয়েছে। শনিবার উত্তমকে বসিরহাট মহকুমা আদালতে হাজির করানো হলে তাঁকে ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতে চাওয়া হয়। আর তার পরেই শিবুর গ্রেফতারির খবর সামনে এসেছে।
ধৃত উত্তমকে গত সপ্তাহেই ছ’বছরের জন্য সাসপেন্ড করেছে তৃণমূল। সন্দেশখালিতে গিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক ইঙ্গিত দেন, প্রয়োজনে শিবুর বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ করতে পিছপা হবে না তৃণমূল

উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, এই ঘটনায় যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তাদের সবাইকে গ্রেফতার করা হবে। যদিও, সন্দেশখালির প্রতিবাদ আন্দোলনের পেছনে বিজেপি, সিপিএমকে দায়ী করেছেন তিনি। তবে শেখ শাহজাহানকে এখনও কেন গ্রেফতার করা হল না, সে নিয়েও এখনও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।

Sandeshkhali Incident

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version